ডেস্ক রিপোর্টঃ

নেত্রকোণার খালিয়াজুরী উপজেলার খালিয়াজুরী কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা প্রভাষক ও সাবেক অধ্যক্ষ( ভারপ্রাপ্ত)এডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহাম্মদ দীর্ঘ ১০ বছর পর তাঁর চাকুরি ফিরে পেলেন। জানা যায়, নেত্রকোণা জেলার খালিয়াজুরী কলেজটি হাওর অঞ্চলে অবস্থিত।কলেজটি ১৯৯৪ ইং সালে স্থাপিত হয়। শুরু থেকেই এডভোকেট গিয়াস উদ্দিন কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক পদে যোগদান করেন।প্রায় পাঁচ বছর চাকরি করার পর ১৯৯৯ ইং সনে তিনি সহ উক্ত কলেজের ৫/৬ জনের এমপিও ভুক্ত হয়।
তিনি দীর্ঘদিন সুনামের সাথে চাকরি করেন,দলীয়ভাবে তিনি ছিলেন বিএনপি’র খালিয়াজুরী থানা কমিটির সদস্য ও আদর্শ একজন কর্মী। কিছুদিন তিনি খালিয়াজুরী থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পদেও দায়িত্ব পালন করেন,এই সময়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের প্রিয় ভাজন হয়ে ওঠেন।
২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে তাঁর উপর বিভিন্নভাবে অত্যাচার অবিচার শুরু হয়, এমনকি হামলা মামলা থেকেও তিনি রেহাই পাননি।
নেত্রকোনা জেলার চার আসনের (মদন-মোহনগঞ্জ – খালিয়াজুরী ) আওয়ামীলীগের মনোনীত এমপি রেবেকা মমিন ২০১৪ ইং সনে উক্ত কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর, অত্র কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কামেন্দ্র সরকারের সহযোগিতায় চার দিনের অনুপস্থিত থাকার কারণ দেখিয়ে ০৩/১২/২০১৪ তারিখে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন।
উক্ত সাময়িক বরখাস্তের আদেশ বাতিল চেয়ে ০১/০১/২০১৫ ইং তারিখে নেত্রকোনার জেলা জজ কোর্টে খালিয়াজুরী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন, মামলা নাং ০১/২০১৫ ইং। পরবর্তীতে ২৯/০১/২০১৫ ইং তারিখে উক্ত সাময়িক বরখাস্ত, অন্যায়, অবৈধ ও বেআইনী বলে আদেশ হয়।উক্ত আদেশে তিনি যোগদানের পর থেকে সমস্ত বকেয়া বেতন ভাতা প্রাপ্য হবেন বলে উল্লেখ করা হয়। যার ফলে তাঁকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা সম্ভব হয়নি।
পরবর্তীতে হাইকোর্টে রিট পিটিশনের রায়ের আলোকে প্রভাষক এডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহাম্মদ, ডিজি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যানের বরাবরে পৃথক দুটি আবেদন করেন,কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি।পরে খালিয়াজুরী বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালত বাদী পক্ষে দুতরফা সূত্রে ডিক্রী ও আদেশ প্রদান করেন।উক্ত ডিক্রীতে বলা হয় ০৩/১২/২০১৪ ইং তারিখে বাদীকে সাময়িক বহিষ্কার সম্পূর্ণ বেআইনি, অবৈধ, অন্যায় ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক। তখন হইতে অদ্যাবধি পর্যন্ত সাকুল্য বকেয়া বেতন ভাতাদি প্রাপ্ত হতে কোন বাঁধা নেই।
গত ৫ আগস্ট এর পর আওয়ামী লীগ সরকার পতনের সাথে সাথে হাইকোর্টের রীটের আলোকে মামলাগুলো পুনরায় চালু হয়।মামলা বাদীর পক্ষে বকেয়া বেতন /ভাতাদি সহ চাকরিতে যোগদানের জন্য রায় হয়। উক্ত আদেশের প্রেক্ষিতে তিনি অত্র কলেজ সভাপতি মহোদয়ের নিকট পুনঃ যোগদানের জন্য আবেদন করেন।সভাপতি মহোদয় অধ্যক্ষ সহ কমিটির মিটিং এ ২৮/০৪/২৫ ইং তারিখের আলোচনা পূর্বক মামলার রায়ের ভিত্তিতে চাকরিতে পুনঃ যোগদানের কোন বাধা না থাকার কারণে সভায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে চাকরিতে পুনরায যোগদান করার ও বেতন ভাতাদি উত্তোলনের জন্য অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
অত্র কলেজের অধ্যক্ষ মনিভুষণ সরকার বলেন,’আমি নেত্রকোনা জেলা জজ আদালতের বিজ্ঞ জিপির সাথে চিঠির মাধ্যমে ও মতামতের ভিত্তিতে জানা যায়, আইনগত কোন বাধা নাই’।
তাই তাকে পুনঃ যোগদান সহ চলতি এপ্রিল মাসের বেতন ভাতাদি উত্তোলন করার অনুমতি প্রদান করা হয়। খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও খালিয়াজুরী কলেজের কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ উজ্জল হোসেন বলেন, মামলার রায় এর ভিত্তিতে আইনগত কোন বাধা না থাকার কারণে প্রভাষক গিয়াস উদ্দিনকে যোগদান সহ বিল/ ভাতা উত্তোলন করার জন্য অনুমতি প্রদান করা হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রভাষক গিয়াস উদ্দিন ২৮/০৪/২৫ ইং তারিখ খালিয়াজুরী কলেজে পুণঃ যোগদান করেন এবং ২৫/০৫/২৫ ইং তারিখে এপ্রিল মাসের বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন।
