সর্বশেষ
15 Nov 2025, Sat

কেন্দুয়ায় পাওনা টাকাকে কেন্দ্র করে মারামারি,লুটপাট ও মামলা;প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ

কোহিনূর আলম, কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) প্রতিনিধিঃ

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় পাওনা টাকাকে কেন্দ্র করে মারামারি ও লুটপাটের ঘটনায় মামলার বিপরীতে প্রতিপক্ষের মিথ্যে মামলা দায়ের করার অভিযোগ ওঠেছে ।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, নওপাড়া ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামের দক্ষিণ পাড়া বা ঢুলি পাড়ায় ফসলের বিনিময়ে পাওনা ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা চাইতে গেলে গত ৮ মে দিবাগত রাত আনুমানিক ৯ টায় মারামারি ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে । এতে উভয় পক্ষেরই একাধিক লোক আহত হয়।মাথার আঘাতে গুরুতর আহত হন পাওনাদার মোঃ আকাশ মিয়া।প্রথমে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে,পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে জানা যায় পারিবারিক ও হাসপাতাল সূত্রে।

৮ মে সংঘটিত মারামারি ও লুটপাটের ঘটনায় ৯ মে আকাশের বড় ভাই মোঃ আল মামুন বাদী হয়ে কেন্দুয়া থানায় বিবাদী শাহ আলম, লাল মিয়া, হালেমা ও হাফসা আক্তারসহ মোট ৪ জনকে আসামী করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ।

মোঃ আকাশ মিয়া বলেন, আমার মা ও বউ টাকা চাইতে গেলে তাদেরকে যা-তা বলে অপমান করে দেয় আমার চাচাতো ভাই শাহ আলম ।পরে আমি জিজ্ঞেস করতে ও টাকা চাইতে গেলে পরিকল্পিতভাবে আমার উপর চড়াও হয় । এতে আমি গুরুতর আহত হই । অথচ আমিসহ আমাদের নামে একটি মিথ্যা মামলাও দায়ের করে । আমি এর সঠিক তদন্ত চাই।

জানা যায়, উক্ত ঘটনায় হালেমা আক্তার বাদী হয়ে নেত্রকোণা বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।যেখানে ঘটনার তারিখ ও সময় উল্লেখ করা হয়েছে ৯ মে সকাল ৭টা ।

মাকসুদা ইসলাম (মোঃ আকাশ মিয়ার মা) কেঁদে কেঁদে বলেন, ৮ তারিখের রাতের ঘটনায় আমার ছেলে গুরুতর আহত হওয়ায় হাসপাতালে দ্বিকবিদিক ছিলাম । তবুও আমাদের নামে ওরা (হালেমা) মিথ্যা মামলা দায়ের করে । এমনকি আমার মেয়ে ঘটনার সময় তার শ্বশুর বাড়ি থাকা সত্ত্বেও মিথ্যা মামলার আসামী করা হয়েছে। তার নামে লাল কালির দাগ দেয়া হয়েছে।সরকারি চাকুরীর ক্ষেত্রে আমার মেয়ের অনেক বড় বাধা হয়ে গেলো ।

হালেমার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা এনেছিলাম। আগুন (অগ্রহায়ণ) মাসে ১ লাখ টাকা ও ১৬ মণ ধান দিয়ে দিছি । বাকী ৪০ হাজর টাকাও দিয়ে দিবো, তবে একটু সময় লাগবো। মামলার ব্যাপরে কথা হলে তিনি বলেন, তারাই আগে মামলা করেছে । তাই আমরাও মামলা করেছি । ঘটনার সময় ও তারিখ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সময় রাত আনুমানিক ১০টা বা ১১টা হবে , তারিখ মনে নেই । আপনি তো মামলায় ৯ মে সকাল ৭টা উল্লেখ করেছেন, এখন বলেছেন অন্য কথা; কেনো? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি।

উভয় পক্ষের প্রতিবেশী দিলুয়ারা আক্তার বলেন, আমি এসে দেখলাম আকাশের মাথা থেকে রক্ত পড়ছে এবং বাড়ির লোকজন জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নিয়ে যায় তাকে। এরপর দিন সকাল ১০/১১টার দিকে তারা বাড়ি আসে।

নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট সারোয়ার জাহান কাওছার মুঠোফোন বলেন, ৯ মে সকাল ৭টায় মারামারি বা লুটপাটের কোন ঘটনা আমার জানা নেই । তিনি আরো বলেন, এর আগে অর্থাৎ ৮ মে দিবাগত রাতে লগ্নি টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মারামারির ঘটনা শুনেছি। আমি তখন ঢাকায় ছিলাম।

বাদী আল আমিনের দায়ের করা অভিযোগের তদন্ত অফিসার কেন্দুয়া থানার এসআই মোশাররফ হোসেন মুঠেফোনে ঘটনার তারিখ ও সময় ৮ মে দিবাগত রাত ৯ ঘটিকা নিশ্চিত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *