
কোহিনূর আলম, কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) প্রতিনিধিঃ
মো. সন্তোষ মিয়া একজন হাঁস খামারি । তাঁর স্বপ্ন ছিলো আরও একটি খামার গড়ে তোলা । আটপৌরে জীবনের হিসেব নিকেশ মাড়িয়ে একটু মেরুদণ্ড সোজা হয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা ছিলো আপ্রাণ । তাঁর ২ ছেলে পঙ্গু ও ২ মেয়ে বিবাহিত । গ্রামের বাড়ি নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের বেজগাতি (হাওর এর বাড়ি) ।
মো. সন্তোষ মিয়া ১লাখ ৯০ হাজার টাকা পুঁজি দিয়ে ২১০০শত হাঁসের বাচ্চা নিয়ে স্বপ্ন বুনছিলেন — পুঁজিতে সুদের ৫০ হাজার টাকা ও হাঁসের বাচ্চাদের খাবারের দোকান বাকী ৪০ হাজার টাকা মিটিয়ে নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর ।
গত ৮ মে ভোরে প্রতিদিনের মতো খামার থেকে হাঁসের বাচ্চাদের খামারের কাছেই একই গ্রামের মুসলেম উদ্দিনের পানি জমাট ও পতিত জমিতে চড়াতে নিয়ে যান এবং কিছু সময়ের মধ্যে বাচ্চাগুলো মুখ দিয়ে ফেনা বের করে ধড়পড়িয়ে মারা যায় । এতে প্রায় আড়াই লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় তাঁর । পরপরই ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেন -কেন্দুয়া থানা পুলিশ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ সাখাওয়াত হোসেন তারেক হাঁসের পোস্টমর্টেম করে নিশ্চিত করেন, কোন রকম ইন্সপেকশন বা রোগ বালাই ছিলো না । প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পয়জনিং কারণে এদের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মতিউর রহমান মুঠোফোনে জানান, আমরা স্যাম্পল সংরক্ষণে রেখেছি ।
পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা এখনো পাইনি । সোমবার অফিস খুলবে । বিষয়টি আমি দেখবো ।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানা অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, অজ্ঞাতনামা বিবাদি বা বিবাদিদের আসামি করে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি । মৃত হাঁসের স্যাম্পল ক্যামিকেল টেস্টের জন্য প্রাণিসম্পদ অফিস কাজ করবে । পুলিশ প্রশাসন কর্তৃক প্রাণিসম্পদ অফিসকে কোন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঠিক আছে আমি কথা বলছি । তিনি আরো বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
স্থানীয়দের দাবি মো. সন্তোষ মিয়ার মতো মানুষের স্বপ্ন ভাঙ্গার পেছনে কী বা কারা দায়ী তা উন্মোচন করা হোক এবং সেই সাথে তাঁর পাশে দাঁড়াতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা।
