
মাজহারুল ইসলাম উজ্জ্বল
কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় একসময় জ্ঞানপিপাসুদের মিলনকেন্দ্র ছিল উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরি। কিন্তু এখন সেই আলো নিভে গেছে। অবহেলা, অযত্ন আর দীর্ঘদিনের নিষ্ক্রিয়তায় লাইব্রেরিটি আজ ধুঁকছে চরম বেহাল অবস্থায়।
বর্তমানে পাঠাগার কক্ষের আশপাশে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ, দরজায় তালা ঝুলে থাকে সারাদিন।স্থানীয়দের অভিযোগ,রাতের নিস্তব্ধতায় এই জায়গাটি এখন পরিণত হয়েছে মাদকসেবীদের আখড়ায়।
জানা গেছে,দুই যুগ আগেও প্রতিষ্ঠিত এই লাইব্রেরিটি একসময় ছিল প্রাণবন্ত,প্রতিদিনই সেখানে ভিড় করতেন ছাত্র-শিক্ষক ও বইপ্রেমীরা।পরে পুরাতন উপজেলা পাবলিক হল পুনঃনির্মাণের সময় লাইব্রেরিটি উপজেলা পরিষদের কোর্ট ভবনের একটি কক্ষে স্থানান্তর করা হয়।সেই থেকেই ধীরে ধীরে হারাতে থাকে এর প্রাণচাঞ্চল্য।
উপজেলা প্রশাসনের অধীনে থাকা এই লাইব্রেরির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে কেউই তেমন কিছু জানেন না।স্থানীয়দের অভিযোগ,অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দ থাকলেও লাইব্রেরির উন্নয়নে প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হাশেম বলেন,ছোটবেলায় আমরা নিয়মিত বই পড়তে যেতাম সেখানে। এখন দেখলে মন খারাপ হয়ে যায়।অবহেলার কারণেই আজ লাইব্রেরিটি প্রায় অচল।
কেন্দুয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই সেলিম বলেন,একটি পাবলিক লাইব্রেরি কেবল বইয়ের স্থান নয়,এটি সমাজের জ্ঞানচর্চা,সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও শেখার পরিবেশ গড়ে তোলে।তাই প্রশাসনের প্রতি আহ্বান,দ্রুত উদ্যোগ নিয়ে লাইব্রেরিটিকে আবারও জ্ঞানপিপাসুদের উপযোগী করে তুলুন।
বিএনপি নেতা ও উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাহমুদুল হক ফারুক বলেন,এই লাইব্রেরিটির এক সময় বেশ জৌলুশ ছিল। আমি ভোটে নির্বাচিত হয়ে বহু দিন দ্বায়িত্ব পালন করেছি।এই প্রতিষ্ঠানের সাথে অনেক স্মৃতি জড়িত আছে।আমি চাই মৃতপ্রায় লাইব্রেরিটি চালু করা হোক।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমদাদুল হক তালুকদার জানান,লাইব্রেরিটির বিষয়ে নথিপত্র দেখে বলতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
জ্ঞানের আলো ছড়ানোর কেন্দ্রটি আজ অবহেলায় অন্ধকারে।সচেতন মহল বলছেন,অল্প উদ্যোগেই আবার প্রাণ ফিরতে পারে কেন্দুয়ার একমাত্র পাবলিক লাইব্রেরিতে।
