ডেস্ক রিপোর্টঃ

নেত্রকোণার কলমাকান্দায় জোরপূর্বক জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগে সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে ভুক্তভোগী কলেজ শিক্ষক মোঃ মাহমুদুল হাসান জাহিদ।
গত ১৮ই সেপ্টেম্বর(বৃহস্পতিবার) রাতে কলমাকান্দা থানায় এ অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, কলমাকান্দা থানার লেঙ্গুড়া ইউনিয়নের রাজনগর বাজার প্রাঙ্গণে কলেজ শিক্ষক মোঃ মাহমুদুল হাসান জাহিদ ও তাঁর পরিবারের ক্রয়কৃত ত্রিশ শতাংশ জমি মাতৃ ওয়ারিশ দাবি করে দখলের পায়তারা করে আসছে অভিযুক্ত লেঙ্গুরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম কামালউদ্দিন ফিরোজ।বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকবার দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয় এবং বিবদমান দুই পক্ষের মাঝে সালিশি বৈঠক হলেও সুষ্ঠু সুরাহা না হওয়ায় গত ১৬ ই সেপ্টেম্বর সকালে স্থানীয় ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল লোক বিবদমান জমি দখলের চেষ্টা চালায়।
এ সময় অভিযোগকারীর পক্ষের লোকজন এগিয়ে আসলে অন্যরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে,যা নিয়ে এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কলেজ শিক্ষক মোঃ মাহমুদুল হাসান জাহিদ জানান, বিগত প্রায় ৩০বছর আগে আমার দাদার ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে এ জমি ক্রয় করে আমার বাবা গোলাম মোস্তফা, আমি ও ছোট ভাই এবং মায়ের নামে সাফ কাওলা দলিল করে জমা খারিজ দিয়ে ভোগ দখল করে আসছি।কিন্তু কিছুদিন যাবত আমার দাদার আরেক ছোট ভাই এ কে এম কামাল উদ্দিন ফিরোজ এই জমিকে তার মায়ের ওয়ারিশ দাবি করে দখলের পায়তারা করছে।এক্ষেত্রে তাকে সহযোগিতা করছে বর্তমান স্হানীয় ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দীন।সে ও তার লোকজন ফিরোজ চেয়ারম্যানের হয়ে বেশ কয়েকবার জায়গা দখল করার চেষ্টা চালিয়েছে। আমি ও আমার ছোট ভাই চাকরি সূত্রে এলাকার বাহিরে অবস্থান করি। বাবা ও মা একা একা বাড়িতে থাকে।আমার প্রতিপক্ষের লোকজন যেকোনো সময় আমার বাবার উপর আক্রমণ চালাতে পারে ও আমাদের বৈধ ক্রয়কৃত জমি জোরপূর্বক দখল করে নিতে পারে।আমি ও আমার পরিবার বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।আমি প্রশাসনের নিকট তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানাই।
বিষয়টি নিয়ে জাহিদের বাবা গোলাম মোস্তফা জানান,আমি ১৯৯৫ সাল থেকে জমিটি ক্রয় করে চাষাবাদ করে আসছি।কিন্তু কিছুদিন ধরে আমাকে ফিরোজ চেয়ারম্যান ও তার কয়েকজন সঙ্গী চাষাবাদ করতে বাধা প্রদান করছে।আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।প্রশাসনের নিকট সঠিক ও সুষ্ঠু বিচার প্রার্থনা করছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত স্থানীয় ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন মোবাইলে গণমাধ্যম কর্মীদের জানান,উক্ত জায়গা নিয়ে চেয়ারম্যান ও জাহিদের পরিবারের সাথে দীর্ঘদিন যাবত দ্বন্দ্ব চলে আসছে। আমি ও আমার লোকজন এই ঘটনায় কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে উত্তেজনা প্রশমন করতে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম,জায়গা সংক্রান্ত ঘটনাটি জাহিদ ও ফিরোজ চেয়ারম্যানের পারিবারিক বিষয়।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে অভিযুক্ত এ কে এম ফিরোজের সাথে যোগাযোগ করতে তার বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। এ সময় তার ঘর তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়।তার মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ সময় রাজনগর বাজারে উপস্থিত কয়েকজন গ্রামবাসীর সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে তারা জানান,আমরা প্রায় ৩০ বছর ধরে দেখে আসছি কলেজ শিক্ষক জাহিদের বাবা গোলাম মোস্তফা চাষাবাদ করে আসছে।কিন্তু হঠাৎ করে ফিরোজ চেয়ারম্যান জমিটি তার বলে দাবি করছে এবং তাদেরকে জমি চাষে বাধা প্রদান করছে।এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন সময় সংঘর্ষ বেঁধে যেতে পারে।আমরা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কলমাকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান বলেন,আমরা অভিযোগ পেয়েছি।তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
