
ডেস্ক রিপোর্টঃ
নেত্রকোণা পৌর এলাকার পশ্চিম মালনীতে ভোররাতে এক পরিবারের উপর সশস্ত্র হামলা চালিয়ে বসত বাড়িতে ভাঙচুর,লুটপাট এবং নারী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নারীসহ দুইজন আহত হয়েছেন। হামলাকারীরা স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করেছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগী মো. নুরুজ্জামান (৩৮) নেত্রকোণা মডেল থানায় দায়ের করা অভিযোগে জানান, তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তার অনুপস্থিতিতে গত ৪ জুলাই ভোররাত সাড়ে ৫ টার দিকে পশ্চিম মালনী এলাকায় তার বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
অভিযোগে বলা হয়, পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিবেশী ফেরদৌস মিয়া,তানিয়া আক্তার, বাদশা মিয়া, বিলকিছ আক্তার, তানজিম, সাবান মিয়াসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৬-৭ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তারা দা, রামদা, লোহার রড ও বাঁশের লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় এবং পরিবারের সদস্যদের ওপর আক্রমণ করে।
এ সময় নুরুজ্জামানের মা কুলসুম আক্তার ও স্ত্রী প্রিয়া মনি গুরুতর আহত হন। পরে তাদের নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা প্রিয়া মনির গলা থেকে স্বর্ণের চেইন (মূল্য আনুমানিক ৭৫,০০০ টাকা) ও কান থেকে এক জোড়া স্বর্ণের দুল (মূল্য আনুমানিক ৪০,০০০ টাকা) ছিনিয়ে নেয়। এছাড়া নারী সদস্যদের শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগও তোলা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশীদের হস্তক্ষেপে হামলাকারীরা পালিয়ে গেলেও যাওয়ার সময় প্রাণনাশের হুমকি ও চাঁদা দাবি করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে বাদী মোঃ নুরুজ্জামান বলেন,আসামিরা যেভাবে আমাদের বাড়ির মহিলাদের উপর হামলা,ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে,কোন ডাকাতও এভাবে হামলা করে না। আমাদের কাছে হামলার ভিডিও আছে,তবুও থানা থেকে এখন পর্যন্ত কোন পুলিশ এসে তদন্ত করে যায়নি। আমরা প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার দাবি করছি।
অন্যদিকে অভিযুক্তদের একজন মোঃ বাদশা মিয়া জানান,জমির মালিক আমি,তারা দখল করে আছে।হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট এর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমরা কোন হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট করিনি। তারা নিজেরাই ভেঙে আমাদের উপর দোষ চাপাচ্ছে।বরং তারাই আমাদের মারধর করেছে,আমরাও থানায় অভিযোগ করেছি।
অভিযুক্ত আরেকজন মোছাঃতানিয়া আক্তার দাবি করেন,“আমরা কোনো ভাঙচুর করিনি বা চাঁদা দাবি করিনি। বরং তারাই আমাদের হুমকি দিচ্ছে এবং আমাদের জমি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে। আমরাও থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।”
এ বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল।তারা বহুবার মীমাংসার চেষ্টা করলেও কোনো সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। বর্তমানে উভয় পক্ষই আইনের আশ্রয় নিয়েছেন।
নেত্রকোণা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহনেওয়াজ বলেন, “দুই পক্ষই লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
